টিভি ও ফেসবুকে হাঁস লালন পালন করার দৃশ্য দেখেই উদ্বুদ্ধ হন আবুল কালাম। এরপর অল্প অল্প করে টাকা জমাতে শুরু করেন। দু’বছর আগে চায়ের দোকানের ব্যবসা ছেড়ে কষ্ট করে জমানো প্রায় এক লাখ টাকা নিয়ে শুরু করেন উন্নত জাতের হাঁস পালন।
প্রথমে ২৫/৩০টি হাঁস দিয়ে শুরু করেন খামার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আবুল কালাম আজাদকে। ছোট-বড় মিলিয়ে তার খামারে বর্তমান প্রায় ছয় হাজারের বেশি হাঁস রয়েছে। এর মধ্যে ডিম পাড়া হাঁস রয়েছে ১০০টি। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তাও বিক্রি করছেন বাজারে। এর পাশাপাশি দু’শতাধিক দেশি মুরগী পালন এবং মুরগির বাচ্চাও উৎপাদন করছেন আবুল কালাম।
আরও পড়ুন: কৃষি অনুষ্ঠান দেখে চাঁদপুরে যুবকের মাল্টা চাষে সফলতা
দুই দিনে এক লট অর্থাৎ ১২০০ হাঁসের বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর তা বিক্রি হয় প্রায় ৩৫ হাজার টাকায়। খরচ বাদ দিয়ে সব মিলিয়ে মাসে আবুল কালামের আয় হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। প্রথমে ১৫ হাজার টাকায় দুটি পুকুর দুই বছরের জন্য লিজ নেন তিনি। সেই পুকুরে হাঁস পালনের পাশাপাশি মাছ চাষও করছেন।
আবুল কালামের খামারে এখন রয়েছে উন্নতজাতের খাকি ক্যাম্বল, জেনডিন, রানাডা ও ব্লাকো জাতের হাঁস। তার এই খামারের আয় ও উন্নতি দেখে খুশি প্রতিবেশীরাও।
স্থানীয়রা জানান, আবুল কালাম আজাদ এই খামার করে গ্রামে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। অনেক বেকার যুবক তার খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
খামারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘চায়ের দোকান করার সময় টিভি, মোবাইল ও ফেসবুকে হাঁস লালন-পালন করে মানুষের স্বাবলম্বী হওয়া দেখে আমি এতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। এরপর কিছু টাকা জমিয়ে চায়ের দোকান বাদ দিয়ে হাঁসের খামার শুরু করি। স্ত্রী, সন্তান এবং পুত্রবধূরাও আমাকে কাজে সহযোগিতা করছেন। বর্তমানে এই খামার থেকে ৬/৭ লাখ টাকা পূজি হয়েছে।’
তবে উলিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারের বিষয়ে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন আবুল কালাম।
আরও পড়ুন: ছাতকে ৩ তরুণের সাম্মাম ও রক মেলন চাষে সফলতা
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘স্বল্প পুঁজি নিয়ে আবুল কালাম আজাদ যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, বেকার যুবকরাও একইভাবে এগিয়ে আসলে আমিষ জাতীয় খাদ্যের ঘাটতি পূর্ণ হবে এবং দারিদ্রতাও দূর হবে।’
জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।